বিবর্তনবাদ ও সৃষ্টি তত্ত্ব ইসলামি পিডিএফ বই ডাউনলোড করুন

 


বইয়ের নামঃ বিবর্তনবাদ ও সৃষ্টি তত্ত্ব
বইয়ের পৃষ্টাঃ ১৯৬
সাইজঃ ৬ এমবি

ডাউনলোড লিঙ্ক নিচে দেওয়া আছে 

এই দুনিয়ায় মানুষের আবির্ভাব ঘটেছে কিভাবে? সৃষ্টির সেরা মানুষ কি কোন ইতর প্রাণী থেকে অস্তিত্ব লাভ করেছে নাকি সরাসরি মানুষ হিসেবেই তার যাত্রা শুরু হয়েছে? চিন্তাশীল মানুষের কাছে এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্ববহ; কেননা এর সুষ্ঠু ও নির্ভুল জবাব ছাড়া দুনিয়ায় মানুষের প্রকৃত অবস্থান ও মর্যাদা নিরুপণ সম্ভব নয়—সম্ভব নয় তার জীবনের কোন মহৎ লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সে লক্ষ্যে পৌঁছার জন্যে কোন সুস্থ কার্যক্রম গ্রহণ।

দুনিয়ার প্রাচীন ও প্রতিষ্ঠিত ধর্মগুলো মানুষের আবির্ভাব সম্পর্কে মোটামুটি একই ধারণা পোষণ করে আসছে। তাদের মতেঃ গোটা প্রাণীকুলের মধ্যে মানুষ শুধু মানুষ হিসেবেই তার যাত্রা শুরু করেছে, কোন ইতর প্রাণী থেকে তার আবির্ভাব ঘটেনি। মহান আল্লাহ তাকে সরাসরি ও পুরোপুরি মানুষ রূপেই সৃষ্টি করেছেন। এ ব্যাপারে ইসলাম বরং এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে মানুষকে সেরা সৃষ্টি (আশরাফুল মাখলুকাত) ও আল্লাহর প্রতিনিধি (খলীফাতুল্লাহ) রূপে আখ্যায়িত করে তাকে সমগ্র প্রাণীকুলের ঊর্ধে স্থান দিয়েছে।

কিন্তু আধুনিক কালের কিছু কিছু প্রাণীবিজ্ঞানী মানুষের এই মর্যাদাকে স্বীকার করতে প্রস্তুত নন। তাঁরা ইতর প্রাণী থেকে মানুষ সৃষ্টির জন্যে বিবর্তন বা ক্রমবিকাশ নামক এক অদ্ভুত তত্ত্ব (Theory of evolution) উপস্থাপন করেছেন। তাঁদের ধারণায় বানর গোত্রীয় প্রাণী নাকি ধাপে ধাপে খোলস পাল্টে একদিন হঠাৎ পূর্ণাঙ্গ মানুষে রূপান্তরিত হয়েছে; সে প্রথম থেকে সরাসরি মানুষ হিসেবে জন্ম নেয়নি। ঊনিশ শতকের প্রাণী বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন এই তত্ত্বের সবচেয়ে জোরাল প্রবক্তা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।

কিন্তু এই মতবাদের প্রবক্তারা আজ পর্যন্ত তাঁদের বক্তব্য বা দাবির সপক্ষে কোন অকাট্য যুক্তি-প্রমাণ ও নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য-সাবুত উপস্থিত করতে পারেননি। তাঁরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থান থেকে বানর গোত্রীয় প্রাণীর কিছু বিক্ষিপ্ত কংকাল সংগ্রহ করে একটি মনগড়া তত্ত্ব খাড়া করার ব্যর্থ প্রয়াস ছাড়া ধাপে ধাপে খোলস পাল্টানো তথাকথিত আধা-বানর কিংবা আধা মানুষের কোন পূর্ণাঙ্গ কংকাল আবিষ্কার করতে সক্ষম হননি।

তাছাড়া বিবর্তন বা ক্রমবিকাশের নিয়মে আজকে কেন ধাপে ধাপে খোলস পাল্টে ইতর প্রাণী থেকে মানুষ তৈরী হচ্ছেনা কিংবা মানুষ থেকে অন্য প্রাণী অস্তিত্ব লাভ করছেনা, তাঁরা সে প্রশ্নেরও কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এ পর্যায়ে তাঁদের বক্তব্যের গরমিলগুলো এতই প্রকট যে, একজন চিন্তাশীল ও সমঝদার লোকের পক্ষে তা বুঝতে কিছুমাত্র বেগ পেতে হয়না। কিন্তু তৎসত্ত্বেও কিছু স্থলবুদ্ধির লোক এই অদ্ভুত তত্ত্বটি নিয়ে অযথা পানি ঘোলা করতে এবং অপরিণত তরুণদের মাঝে বিভ্রান্তির ধূম্রজাল ছড়াতে চাইছে।

একালের মহান ইসলামী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক, আল্লামা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (রহ) আলোচ্য 'বিবর্তনবাদ ও সৃষ্টিতত্ত্ব' গ্রন্থে বিভ্রান্তির এই ধূম্রজাল অপসারণ করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। তিনি ডারউইন ও তাঁর অনুসারীদের বক্তব্যগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এ সত্য অকাট্যরূপে প্রমাণ করেছেন যে, বিবর্তন বা ক্রমবিকাশ হচ্ছে সেরেফ একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ধোকা। এ ধরনের কোন মনগড়া প্রক্রিয়ায় কোন ইতর প্রাণী কখনো খোলস বদল করে মানুষে উন্নীত হয়নি এবং তা হতেও পারেনা।

শুধু তা-ই নয়, সৃষ্টিলোকে প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের অভিমতকেও গ্রন্থকার খণ্ডন করেছেন অত্যন্ত কুশলতার সাথে। তিনি এতৎসংক্রান্ত তাবৎ বক্তব্য বিশ্লেষণ করে এ সত্য নিঃসংশয়ে প্রমাণ করেছেন যে, নির্বস্তুক প্রাণ কোন বস্তু বা পদার্থ থেকে উৎসারিত হতে পারেনা, বরং এর উৎপত্তি ঘটেছে নির্বস্তুক এক মহান ও পরাক্রমশালী সত্তার ইচ্ছা থেকে। সৃষ্টির আদি থেকে সেই ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটছে গোটা প্রাণীকূলে ।

তাছাড়া গোটা প্রাণীকূলে মানুষই শুধু চিন্তাশক্তি ও বিবেক-বুদ্ধির অধিকারী। কেবল মানুষের মধ্যেই রয়েছে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ও পাপ-পুণ্য সম্পর্কে একটা জিজ্ঞাসু মন । কোন ইতর প্রাণী এই ধরনের গুণ-বৈশিষ্ট্যের অধিকারী নয় । বিবর্তন বা ক্রমবিকাশের মাধ্যমে এরূপ গুণ-বৈশিষ্ট্য কেউ অর্জনও করতে পারে না। কাজেই ইতর প্রাণী থেকে মানুষের উৎপত্তি সংক্রান্ত ধারণাকে নেহাত একটি অলীক কাহিনী ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।

এই মূল্যবান গ্রন্থটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে এবং দেশের সুধীমহলে সমাদৃত হয় বিপুলভাবে। ফলে গ্রন্থটির সমুদয় কপি নিঃশেষ হয়ে যায় অত্যল্প কালের মধ্যেই। এরপর ১৯৮৪ সনে এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ পায় এবং এ সংস্করণও আগের মতই সমাদৃত হয়। কিন্তু তারপর পাঠকদের উপর্যপুরি তাগিদ সত্ত্বেও আমাদের পক্ষে গ্রন্থটির তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করা সম্ভবপর হয়নি নানা কারণে। বর্তমানে খায়রুন প্রকাশনী গ্রন্থটির পুনপ্রকাশের ব্যবস্থা করে সময়ের একটি বিরাট দাবি পূরণ করেছে, একথা নির্দ্বিধায় বলা চলে।

বর্তমানে মুদ্রণ সামগ্রীর উচ্চমূল্য সত্ত্বেও গ্রন্থটির অঙ্গসজ্জা ও মুদ্রণ-পারিপাট্য যথাসম্ভব উন্নত করা হয়েছে। এর পূর্ববর্তী সংস্করণের ভুল-ত্রুটিগুলো সংশোধনের ব্যাপারেও আমরা পর্যাপ্ত যত্ন নিয়েছি। ফলে বিদগ্ধ পাঠক মহলে গ্রন্থের বর্তমান সংস্করণটি পূর্বাপেক্ষা অধিক সমাদৃত হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। মহান আল্লাহ এই অনন্য খেদমতের জন্যে গ্রন্থকারকে সুউচ্চ মর্যাদা দান করুন, এটাই আমাদের সানুনয় প্রার্থনা।

ডাউনলোড করুন





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ